রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিন কর্মকর্তাকে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় সাবেক শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মরত অবস্থায় তাদের আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান তারা। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা পর প্রক্টরের সহায়তায় তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন তারা। সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তারা এজাহারভুক্ত আসামি। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার, অর্থ ও হিসাব শাখার উপ-পরিচালক আমিনুল হক, অর্থ ও হিসাব শাখার সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, গত সপ্তাহে দাবি জানাতে এসেছিলাম রেজিস্ট্রারের কাছে। তিনি আজকে আমাদের সময় দিয়েছিলেন। আমরা আজ আসার পর তিনি আমাদের পাত্তাই দিচ্ছেন না। স্যার কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমরা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা উনাদেরকে লিগ্যাল সেলে আসতে বলি। পরে স্যার উনাদের প্রক্টর দপ্তরে রেখে যান এবং পুলিশকে ইনফর্ম করুন। আরেক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, এরা সবাই একেকজন আওয়ামী লীগের ক্যাডার। ২০১৮ সালে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। জুলাই-আগস্টেও তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে কিন্তু তারপরও তারা চাকরি করে যাচ্ছেন। এক বছর হয়ে গেলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তাই আজ আমরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিলাম। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার বলেন, আমি কখনো শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করিনি। আন্দোলনে আমি বাসাতেই ছিলাম। ৫ আগস্টে আমি বাসা থেকেই বের হয়নি। শুনেছিলাম আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিন্তু কেউ কখনো কিছু বলেনি। আজ হঠাৎ তারা আমাকে নিয়ে আসছে। আরেক এজাহারভুক্ত আসামি আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সুবহান স্যারের আমলে আমি নিজে ছাত্রলীগের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। আমি কখনো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কিছু করিনি। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করছি কিন্তু আমি চাকরি জীবনে কখনো কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। কোনো শিক্ষার্থীর ওপর কখনো হামলাও করিনি। শুনেছিলাম মামলা হয়েছে কিন্তু বিস্তারিত জানি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্নভাবে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও আছে। কিন্তু তারা আইন অমান্য করে জামিন না নিয়ে এখনো চাকরি করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কোনো দোসর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে থাকতে পারবে না। এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি আবদুল মালেক বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এবং এজাহারভুক্ত আসামি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। মতিহার থানা পুলিশ আমাকে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখিয়েছে তাই আমি তাদের নিয়ে যেতে দিয়েছি। তবে সাবেক শিক্ষার্থীরা যেটা করছে এটা কখনো কাম্য না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মরত অবস্থায় তারা এভাবে ধরে নিয়ে যেতে পারে না। এটা পুলিশের কাজ পুলিশ করবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

রাবিতে তিন কর্মকর্তাকে পুলিশে দিলো সাবেক শিক্ষার্থীরা
- আপলোড সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০১:০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০১:০৫:২৮ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ